যদি কিছু জানতে চান তাহলে কোন ব্যস্ত ব্যক্তি কে জিজ্ঞেস করুন – বেঞ্জামিন ফ্র্যাংকলিন
কখনো খেয়াল করেছেন , সময় কতটা দ্রুত চলে যায়? আপনি যখন প্রচুন্ড ব্যস্ততায় ডুবে থাকেন, সময় কোন দিক দিয়ে পার হয়ে যায় আপনি তা টেরও পান না, দেখতে দেখতে ১টি দিন পার হয়ে যায়। অন্যদিকে আপনি যখন একঘেয়ে সময় কাটান, সময় তখন ধির গতি লাভ করে আর আপনাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে থাকে।
আপনি যদি আপনার প্রয়োজনীয় কাজ ঠিক সময় অনুযায়ী সম্পন্ন করতে না পারাদের দলে হয়ে থাকেন, তাহলে বুঝতে হবে আপনার সময় পরিচালনা বা টাঈম ম্যনেজম্যন্ট এ দক্ষতা একেবারেই নেই বললেই চলে। এক্ষেত্রে যা হয়, আপনি হয়ত কম প্রয়োজনীয় কাজ আগে করবেন, অন্যদিকে আপনার অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কাজ হয়ত আপনি রেখে দিয়েছেন। যাইহোক, আপনি কিছু কৌশল অবলম্বন করে এই দুর্দশা কাটিয়ে উঠতে পারেন। কার্যকরী সময় ব্যবস্থাপনা একজন কর্মী কে আরও বেশি দক্ষতাসম্পন্য করে তোলে।
১। নোট/ ডাইরি রাখুনঃ
অধিকাংশই প্রশ্ন করে থাকেন, গুরুত্বপূর্ণ সময় গুলো সম্পরকে কিভাবে মনে রাখব। এক্ষেত্রে আপনি যদি এই সময় টি নোট করে রাখেন তাহলে আপনার জন্য সুবিধা হয়। বিশেষত এই মুহূর্তে যদি আপনার প্রচুর কাজের চাপ থাকে আর আপনার সাথে যদি প্রত্যেকটা কাজ সময় অনুযায়ী নোট করে রাখেন, সেক্ষত্রে আপনি লাভবান হবেন। আপনি যদি আপনার প্রতিদিনের কাজ সময় অনুযায়ী লিখে রাখেন তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন আসলে কেন আপনি এতদিন সময়মত কাজ করতে পারেন নি।
২। প্রতিদিনের প্ল্যান করুনঃ
সপ্তাহ, মাস কিংবা বছরের প্ল্যান করুন। আপনি যখন আপনার অফিসের ডেস্কে এসে বসেন, প্রথমেই এক গ্লাস পানি নিন তারপর আপনার পুরো দিনের পরিকল্পনা করুন। ৩০ মিনিট সময় নিন এবং চিন্তা করুন সারাদিন এ আপনাকে আজ কি কি করেত হবে। আজকের দিনে কোন কোন কাজের প্রাধান্য আগে দিতে হবে, আপনার আজকের অর্জন কি হবে। এই পদ্ধতি আপনাকে সাহায্য করবে যেন আপনি কোন গুরুত্বপূর্ণ কিছু না ভুলে যান, আর আপনার কি কি করণীয় আছে তা মনে করিয়ে দিতে সাহায্য করে।
৩। বিরতি নিনঃ
আপনি সারাদিন ডেস্কে বসে আছেন আর তাই আপনিই সেরা কর্মী এমনটা ভাবলে কিন্তু ভুল করছেন। এমন টা হলে কিন্তু আপনি মানসিক ক্লান্তি তে ভুগবেন। “মানসীক ক্লান্তি” আপনাকে আরও বেশি ক্লান্ত করে দেয়, সেই সাথে,আপনার কাজ করার উদ্দিপনা ও আপনার ইচ্ছা শক্তিকে কমিয়ে আনে। ফলাফল স্বরুপ আপনার কাজ করার ক্ষমতা ও কার্যদক্ষতা কমিয়ে আনে। সুতরাং কাজের ফাকে ফাকে বিরতি নিন। কিছুক্ষন হাটাহাটি করুন, হাতমুখে হালকা পানি দিন, হালকা পানীয় নিতে পারেন। এতে করে আপনার কাজের গতিশীলতা বাড়বে ।
৪। একাধিক কাজের চাপঃ
আপনি কি খুব ব্যস্ত? আপনার কাজের ভিষণ চাপ, সেক্ষেত্রে যা করবেন, কাজগুলোকে ভাগ করে নিন । আপনি কোন ক্লায়েন্ট এর সাথে কথা বলছেন এবং একই সাথে যদি ইমেইল লিখতে থাকেন, খুব বেশি কষ্টদায়ক মনে হয়না হবে। ভুল। এভাবে কাজ করলে আপনার ভুল হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে তাই যখনি কোন কাজ করবেন মনোযোগ সহকারে করবেন। যদি কাজের বেশি চাপ থাকে তাহলে তার একটি সময়সূচি করে নিতে পারেন।
৫। সব কাজ একবারে শেষ করতে পারবেন নাঃ
খুব সহজ না যখন আপনার কাজের চাপ অনেক বেশি থাকে, আপনি এক্ষেত্রে যতই সক্রিয় থাকুন না কেন। একটি কার্যকর সময় ব্যবস্থাপনা কৌশল আপনাকে সাহায্য করবে আপনি যাতে সময়মত আপনার সব কাজ শেষ করতে পারেন। প্রত্যক্টি দিন আপনার কাছে নতুন মনে হবে যখন আপনি প্রতিদিনের কাজ সময় মত সম্পন্ন করতে পারবেন।
৬। না বলতে শিখুনঃ
একজন সফল মানুষের অন্যতম গুণ হল সুন্দর ভাবে “না” বলতে পারা। একদিন এ আপনি অফিসে কাজ করার জন্য যেটুকু সময় পান তাতে আপনার বাড়তি কাজের সময় থাকেনা। আপনি বিভিন্ন পদ্ধতি তে না বলতে পারবেন। আপনি যদি সরাসরি “না” বলতে ব্যর্থ হন , আপনি অন্যভাবেও বলতে পারেন, যেমন, যেমন আপনি বলতে পারেন, এই মুহূরতে আপনি অন্য কাজে ব্যস্ত আছেন, অথবা, এটা আপনি করলেই ভাল হবে কারন আপনি এর জন্য উপযুক্ত।
৭। বিক্ষিপ্ত কার্য পরিচালনাঃ
ধ্রুন, আপনি কাজ করার জন্য প্রস্তুত এবং আপনার এর জন্য যা দরকার তার সব কিছুই আছে। তারপর আপনার ফোন এ কথা বলছেন, ইমেইল চেক করছেন, মাঝে মাঝে স্যোশ্যাল মিডিয়াতে ও যাচ্ছেন। হয়ত এই ২০ মিনিট আপনি ব্যয় করেছেন কিন্তু কোন কাজ আপনি করেন নি। কি হবে আপনার সাথে ? আপনি শুধু বিক্ষিপ্ত ভাবে আপনার সময় পার করেছেন। সুতরাং সমইয় জ্ঞান সম্পরকে সচেতন হোন। আপনার ফোন সংযোগ বন্ধ করুন, স্যোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন থাকুন শুধু মাত্র ১ ঘন্টার জন্য। দেখবেন আপনি আপনার কাঙ্খিত কাজ গুলোর প্রায় অনেক্টুকু ই সম্পন্ন করে ফেলেছেন।
৮। গড়িমসি করবেন নাঃ
আবারও বলছি , গড়িমসি করবেন না। আপনার যদি কোন কাজ শুরু করতে সমস্যা হয়, তাহলে এক কাজ করুন, কাজ টিকে ছোট করে ভেঙ্গে নিন। কোন বড় ছবির দিকে তাকান, আর বড় ছবিটির যেকন অংশের দিকে তাকান, মানুষ কখনোই একটি বড় কাজ একেবারে সম্পন্ন করতে পারেনা, কিন্তু অনেকেই চিন্তা করে থাকে তারা পারবেন। এক্ষেত্রে তারা কোন কাজ ই সম্পন্ন করতে পারেনা। সুতরাং আপনি কি করবেন ভাবুন। নিজেকে বলুন যে আপনি খুবি ছোট একটি কাজ করতে যাচ্ছেন যা খুব অল্প সময়ে শেষ হয়ে যাবে। কাজ শেষ এ আপনি নিজেকে নিজে বাহবা দিবেন। সুতরাং কোন বড় কাজ কে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নিন।
৯। সময় কে ভাগ করে নিনঃ
মুল্যবান কিছু অর্জন করতে দুটি জিনিস প্রয়োজন হয়: একটি পরিকল্পনা,অন্যটি সময় ‘- লিওনার্ড বার্নস্টেন।। আমি পুরোপুরি এই উদ্ধৃতি সাথে একমত। সুতরাং সফলতা লাভের একমাত্র উপায় হল নির্ধারিত সময়ে আপনার কাজ শেষ করুন। সময় পরিচালনা আপনাকে এই দক্ষতা অর্জন এ সহায়তা করবে। আপনার কাজ আপনি ঠিক সময়ে সম্পন্ন না করলে যা হবে, আগামীকাল ও আপনাকে একই কাজ এ সময় ব্যয় করতে হবে সুতরাং আপনার সময় এর ঘাটতি হলে, চেষ্টা করুন ঠিক সময়ে কাজ টি শুরু করার।
বোনাস টিপস: সু-শৃঙ্খলাঃ
আপনি কতবার নিজেকে নিজে প্রেরনা দিয়েছেন? এখানে সম্ভাবনা আছে সাথে উত্তর ও আছে। একটিই সমস্যা , যা হল প্রেরনা নিয়ে। আপনার নিজ প্রেরনা আপনাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় নিয়ে যায়। প্রেরনা আপনার বন্ধু নয় এটা মনে রাখবেন। নিজের প্রতি নিজে বিশ্বাষ রাখুন এবং সু-শৃঙ্খল ভাবে কাজ করে যান। আপনার ডেস্কে বসে কাজ করুন, সময় নিরধারন করুন কখন কোন কাজ করবেন। আপনি যদি এই নিরধারিত সময়ের ভেতর কোন কাজ নাও করতে পারেন , সমস্যা নেই, কারণ আপনি যদি সু-শৃঙ্খল ভাবে এই পদ্ধতি পুনরাবৃত্তি করেন, যা কার্যকর সময় ব্যবস্থাপনা জন্য অন্যতম পদ্ধতি, অবশ্যই আপনি সফল হবেন। আপনার কাজের চাপ খুব বেশি থাকলে , আপনার মানসীক চাপ কমানোর জন্য আমাদের গাইড লাইন অনুসরন করতে পারেন। এতে করে আপনার পরবর্তী কাজের অনুপ্রেরণা বাড়বে।
বিস্তারিত জানতে আজই ভিজিট করুন- https://www.everjobs.com.bd/ অথবা যোগাযোগ করুন জহুরুল হক খান 01959926050.