‘হে ঈমানদারগণ! তোমদের ওপর রোজা ফরজ করে দেয়া হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার। (সূরা আল-বাকারাহ : ১৮৩)’’
পৃথিবীতে প্রচলিত অন্যান্য ধর্মের রীতিনীতির ন্যায় ইসলামেও রয়েছে আত্মশুদ্ধির জন্য আড়ম্বরপূর্ণ একটি মহিমান্বিত মাস। এ মাসে আছে সাহরি, ইফতার, তারাবিহ, ইতিকাফ, লইলাতুল কদর, ফিতরা ও ঈদুল ফিতর। কুরআন নাজিল হয়েছে এ মাসের লাইলাতুল কদরে, সংঘটিত হয়েছে ইসলামের প্রথম যুদ্ধ বদর ও বিজিত হয়েছে মক্কা। কাজেই আত্মগঠন ও বিজয়ের মাস রমজান। মুসলিম মিল্লাতের জন্য রহমতস্বরূপ এ মাসটি আত্মগঠন, নৈতিক উন্নতি, চারিত্রিক দৃঢ়তা, পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর সমাজ গঠন এবং সামাজিক সাম্যের নিশ্চয়তা বিধানের এক অনন্য সুযোগ। আর কিছুদিন বাদেই সূর্যোদয়ের পূর্ব থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত শুধুমাত্র পরম স্রষ্ঠার অনুকম্পা অর্জনের আশায় পানাহার এবং সকল প্রকার ইহলৌকিক কামনা থেকে নিজেকে নিবৃত রাখার এক অবিচল আত্মিক রণে সামিল হবেন দুনিয়াজুড়ে অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুলসলিম। কালের পরিক্রমায় ১৪০০ বছর ধরে চলে আসা এই ধর্মীয় আচার বিশ্বব্যাপী পালনেও এসেছে অসংখ্য পরিবর্তন। সেহরি-ইফতারের সময়সূচী,ভাব-গাম্ভীর্য পরিবেশে সিয়াম সাধনা আর হালাল রুজি কামাইয়ের ধরন বিশ্বব্যাপী যারপরনাই ভিন্ন। তাই সেই সাথে খাপ খাইয়ে আধুনিক যুগে রোজাব্রতী মানুষদের মোকাবিলা করতে হয় বিভিন্ন পরিস্থিতির। শত বাঁধা, ইবাদত আর ক্ষুদপিপাসায় কাতর হওয়া স্বত্বেও রুজি-রুটি পরিবারের মুখে তুলে দেবার জন্য এই একটি মাস ঘরে বসে থাকেন না মুসলিমরা। সকল জাগতিকতার হাতছানি তাঁরা দৃঢ়তার সাথে নিবৃত করেন। আত্নবিশুদ্ধির এই কঠিন সময়ে সাধারণ কিন্তু অনুসরণীয় কিছু নিয়মকানুন মেনে চললেই দিনগুলো তাঁদের জন্য সহজ এবং সহনীয় হয়ে উঠতে পারে অনায়াসেই।
পবিত্র মাহে রমজান মাসে কর্মক্ষেত্রে
প্রভাবেব উপর ভিত্তি করে এভারজবস
বাংলাদেশ শারীরিক, মানসিকভাবে সবল এবং সুস্থ থাকার জন্য অনুকরণীয় কিছু আচরণ বিধিঃ
দিন শুরু করুন ফজরের নামাজের পর পরই।অনেকেই ফজরের নামাযের পর কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার আগে ঘণ্টাখানিকের জন্য ঘুমিয়ে নেন যা আপনাকে বিশ্রাম তো দেবেই না উল্টো আপনার মস্তিষ্ক হঠাৎ জেগে উঠা আর ঘুমিয়ে পরে আবার জেগে উঠার জন্য বিরূপ শক অয়েভ তৈরি করবে। সারাদিন কর্মক্ষেত্রে মাথা ও শরীর ঝিম ধরে থাকার এটা অন্যতম কারন। চেষ্টা করুন আগে ঘুমিয়ে পড়তে।
সেহরিতে শেষ মুহূর্তে অতিরিক্ত পানি পান না করে পানি এবং খনিজ তরলযুক্ত ফল ইফতারের থেকেই খাওয়া শুরু করুন। এতে সারাদিন আপনার শরীর আর্দ্র থাকবে।শেষ মুহূর্তে খাওয়া অতিরিক্ত পানি কিছুখনের মাঝেই মূত্র এবং গরমে ঘামের মাধমে বের হয়ে যাবে এবং আপনি কর্মক্ষেত্রে অল্পেই পিপাসার্ত হয়ে পরবেন। জিহ্বা দিনের শুরুতেই শুকিয়ে আসবে এবং আপনার কাজে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটবে।
সেহরিতে ধূমপান থেকে বিরত থাকুন। নিকোটিন আপনার মুখ দিনের শুরুতেই ডিহাইড্রেটেড করে ফেলবে। তাছারাও ধূমপানের অভ্যাস রমজানের আগে থেকেই কমানো উচিত কেননা রোজায় শরীরে নিকোটিন কমে যায় এবং অল্পেই মেজাজ খারাপ হয়ে যায় যা আপনার কাজের পরিবেশে ব্যাঘাত ঘটায়।
দুর্বল কিংবা ঘুম ভাব আসলেই কাজ থামিয়ে উঠে পরুন। মুখে পানি দিন। বারান্দা বা খোলা স্থানে গিয়ে শ্বাস নিন বুক ভরে। অক্সিজেন লেভেল বাড়লে কিছুটা হলেও কাজ করার শক্তি পাবেন।
ইফতারে যথাসম্ভব তৈলাক্ত খাবার আর সেহরিতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি শর্করা আর আমিষ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। মাত্রারিক্ত শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট আর আমিষ থেকে পেটে গ্যাস জমতে পারে যা পরবর্তী দিনে কর্মক্ষেত্রে অসম্ভব শারীরিক অস্বস্তিকর অনুভূতির কারন হয়ে দাঁড়াবে।
রোজা রেখে প্রচণ্ড রোদের মাঝে চলাফেরা একেবারেই বন্ধ করে দিন। হিট স্ট্রোক, হাই-ব্লাড প্রেশার, সুগার ফল, ডিহাইড্রেশনের ফলে অজ্ঞান হবার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। যথাসম্ভব রোদে উত্তপ্ত উন্মুক্ত স্থান এড়িয়ে চলুন এবং অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করুন।
বাতাসে জলীয় বাষ্প বা হিউমেডিটি বেশি থাকার কারনে অতিরিক্ত গরমে এবং দাবদাহে আপনি স্বাভাবিকভাবেই অনেক ঘামাবেন। যার ফলে শরীর খুব দ্রুতই পানিশূন্য হবে এবং মিনারেলস হারাবে। যার ফলে দুর্বল লাগার পাশাপাশি আপনার হ্যালুসিনেশন হতেই পারে। শরীরের এরকম বিরূপ আচরণ স্বাভাবিকভাবে নিন এবং বিশ্রাম করুন। কোনভাবেই অতিরিক্ত উত্তেজিত হয়ে পরবেন না।
রোজা রেখে ইবাদত করার মূল লক্ষ্যই হল ধৈর্য্য ধারণ করা এবং অন্য মানুষের কষ্ট-যন্ত্রনা উপলব্ধি করা। আমরা যদি ধৈর্য্যই ধারন করতে না পারি তাহলে রোজা রাখার মূল চেতনাতেই বাঁধা পড়ল। আবু হুরাইয়া থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ(সাঃ) বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি অগাধ বিশ্বাস থেকে রমজানে রোজা রাখে শুধুমাত্র আল্লাহর কৃপা লাভের আশায়, তাঁর পূর্বের সকল পাপকর্ম ক্ষমা করে দেয়া হবে।’’(ইমাম বুখারি)। সুতরাং আসুন, এই রমজানে কর্মক্ষেত্রে ধৈর্য্যের অনুশীলন করি এবং নিজ নিজ শরীরের প্রতি যত্নবান হই। (চলবে) বিস্তারিত জানতে আজই ভিজিট
করুন- https://www.everjobs.com.bd/ or contact Zahurul H Khan on 01959926050.